বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৩৫ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রায় এক মাস পর হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলায় খোয়াই ও সুটকী নদীতে পাওয়া অর্ধগলিত দুই মরদেহের পরিচয় মিলেছে।
নিহতরা হলেন- তারাসই গ্রামের লিল মিয়ার স্ত্রী জমিলা বেগম (৫০) ও তার মেয়ে ফুলবরন নেছা (৩০)। মা-মেয়েকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার পর ফেলে দেয় ফুলবরন নেছার স্বামী শেলু মিয়া।
বুধবার (১০ অক্টোবর) বিকেলে হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেন শেলু মিয়া।
আদালত ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বানিয়াচং উপজেলার তারাসই গ্রামের লীল মিয়ার মেয়ে ফুলবরন নেছার বিয়ে হয় হবিগঞ্জ শহরের উমেদনগর এলাকার নুর মিয়ার ছেলে শেলু মিয়া ওরফে আলমগীরের (৩৫) সঙ্গে। কিন্তু শেলুর ঘরে আরেক স্ত্রী থাকায় সংসারে মনোমালিন্য শুরু হয়। এরপর থেকে বাবার বাড়িতেই বসবাস করতেন ফুলবরন নেছা। গত ৫ সেপ্টেম্বর মামলা সংক্রান্ত কাজে মা জমিলা বেগমকে সঙ্গে নিয়ে হবিগঞ্জ আদালতে আসেন ফুলবরন নেছা। ওইদিন শেলু মিয়ার কথামতো মা মেয়ে তার বাড়ি উমেদনগরে যান। একইদিন রাত ৯টায় শেলু মিয়া তার স্ত্রী ও শাশুড়িকে নিয়ে একটি সিএনজি-অটোরিকশাযোগে গোবিন্দপুর গ্রামে খোয়াই নদীর বাঁধে নিয়ে যায়। সেখানে ৪/৫ সহযোগীকে নিয়ে শেলু মিয়া তাদেরকে গাছের ডাল দিয়ে পিটুনি এবং দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। পরে মরদেহগুলো দুই নদীতে ফেলে দেওয়া হয়।
পরে ৮ সেপ্টেম্বর বানিয়াচং উপজেলার শুটকি নদীর ব্রিজের কাছে ফুলবরনের মরদেহ এবং ১৭ সেপ্টেম্বর বানিয়াচং উপজেলার বাজুকা গ্রামে খোয়াই নদীতে জমিলা বেগমের মরদেহ পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে বানিয়াচং থানার এসআই প্রবাস বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামি দিয়ে মামলা দায়ের করেন। মামলাটি ডিবিতে স্থানান্তর হলে তদন্ত ভার পান উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবুল কালাম আজাদ। তিনি জমিলা বেগমের ফোনের কল লিস্টের সূত্র ধরে ১ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটায় নবীগঞ্জ উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামের ইউনুছ মিয়া ওরফে সাজুর বাড়ি থেকে শেলু মিয়াকে গ্রেপ্তার করেন। পরে তিনি পুলিশের কাছে হত্যার দায় স্বীকার করে।
পুলিশ জানায়- এটি একটি ক্লু লেস চাঞ্চল্যকর হত্যা ছিল। জমিলা বেগমের মোবাইলের সূত্র ধরে হত্যাকারীকে সনাক্ত করা সম্ভব হয়। শেলু মিয়া ১৬৪ ধারা স্বীকার করেছে ফুলবরন বিবি তার দ্বিতীয় স্ত্রী। সে তার কথা শুনতো না এবং অনৈতিক কাজে জড়িত ছিল। তাই সে স্ত্রী ও শাশুড়িকে হত্যা করেছে। এ সময় তার সহযোগীদের নাম বললেও তদন্তের স্বার্থে পুলিশ তাদের নাম প্রকাশ করেনি।
স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির বিষয়টি নিশ্চিত করে বানিয়াচং সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শৈলেন চাকমা জানান, ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ।